হিমবাহের কাজ সম্পর্কিত আলোচনা
নদীর মত হিমবাহও ক্ষয় , বহন ও সঞ্চয় কাজ করে । উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহ প্রধানত ক্ষয় , বহন করে । পর্বতের নিচের অঞ্চলে হিমবাহ প্রধানত সঞ্চয় করে ।
হিমবাহের ক্ষয়কাজ-
হিমবাহ প্রধানত দুভাবে ক্ষয়কাজ করে । ক। উৎপাটন বা প্লাকিং প্রক্রিয়া
খ। অবঘর্ষ প্রক্রিয়া
ক। উৎপাটন বা প্লাকিং প্রক্রিয়া – প্রবহমান হিমবাহের চাপে যখন পর্বত হতে শিলাখন্ড বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় , তখন তাকে উৎপাটন বা প্লাকিং বলে । এই প্রক্রিয়া হিমবাহের ক্ষয়কাজের প্রথম অবস্থা ।
খ। অবঘর্ষ প্রক্রিয়া – হিমবাহ যে সব শিলাখন্ড বয়ে নিয়ে যায় সেগুলির সঙ্গে ঘর্ষনে উপত্যকা ক্রমশ মসৃন হয় । একে অবঘর্ষ বলে ।
সাধারণভাবে হিমবাহের ক্ষয়কাজের ক্ষমতা পাচতি অবস্থার উপর নির্ভর করে । এগুলি হল – ১. হিমবাহের গতি ২. বরফের গভীরতা ৩. হিমবাহের গতিপথের ঢাল ৪. হিমবাহের স্থায়িত্ব ৫. হিমবাহের গতিপথের সিলার প্রকৃতি । নদীর ক্ষয়কাজ প্রক্রিয়ার মধ্যেও অবঘর্ষ অন্যতম প্রক্রিয়া ।
হিমবাহের বহনকাজ –
হিমবাহ যখন নিচেরদিকে ধীরগতিতে নামে তখন টার সঙ্গে ক্ষয়িত বিভিন্ন শিলাখন্ড , নুড়ি , কাঁকর , বালি প্রভৃতি প্রবাহিত হয় । হিমবাহ বাহিত এই সব বোঝাকে হিমগ্রাব বা মোরেন বলে ।হিমবাহের সঙ্গে কঠিন শিলা বাহিত হলে তা পর্বতের গায়ে আঁচড় কাটতে কাটতে এগিয়ে চলে । এইজন্য অনেক সময় হিমবাহ উপত্যকায় আচর কাটা দাগ দেখা যায়।
হিমবাহের সঞ্চয়কাজ –
হিমবাহ চলার সময় ভূমির ঢালের পার্থক্য ঘটলে উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে কিছু সঞ্চয় করে ।তবে হিমবাহের সঞ্চয়কাজ স্পষ্ট ভাবে লক্ষ্য করা যায় হিমবাহের প্রান্তদেশে যেখানে হিমবাহ গলতে শুরু করে এবং পশ্চাদপসরণ করে । তাই পর্বতের নিচুভুমি অঞ্চলেই হিমবাহের সঞ্চয়কাজ বেশি পরিমাণে দেখা যায় ।
0 Comments